ঢাবি’র শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন যুগোপযোগী গবেষণা ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে– প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যুগোপযোগী গবেষণা ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এ ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আজ ২১ জানুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার ‘Celebrating 100 years of the University of Dhaka: Reflections from the Alumni—International and National’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সাইটেশন পাঠ করেন। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান তুলে ধরে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন। তিনি সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনসহ সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা আন্দোলনের সূতিকাগার এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশের সকল অর্জনের বাতিঘর। দেশকে এগিয়ে নিতে মানসম্পন্ন গবেষণার ক্ষেত্রেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নেতৃত্ব দিতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি সবধরণের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। তাঁর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। আমরা মাথা নত করার জাতি নই। আমাদের মাথা উঁচু করে চলতে হবে। আত্মবিশ্বাসী, আত্মমর্যাদাশীল ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে হবে। আগামী প্রজন্মকে দক্ষ মানব সম্পদ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশের প্রাচীনতম এই বিদ্যাপীঠ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত শিক্ষার্থী। তিনি তাঁর প্রিয় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৯৭৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও মৌলিক গবেষণা পরিচালনাই হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার ক্ষেত্রে উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
———————
(মাহমুদ আলম)
পরিচালক
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অনুষ্ঠানটির ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন: https://www.facebook.com/ICTCellDU/videos/789408108306246